বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:০৪ পূর্বাহ্ন

কালিয়ায় সেটেলমেন্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাকে হয়রানির অভিযোগ

নড়াইল প্রতিনিধি : জালিয়াতি ও তঞ্চকীর মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া নড়াইলের কালিয়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বারিক শেখকে জমি উদ্ধারের আবেদনের শুনানীকে কেন্দ্র করে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় ওই মুক্তিযোদ্ধা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত সহকারি সেটেলমেন্ট অফিসার মোহাম্মাদ ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ খানের বিরুদ্ধে গত ৬ ডিসেম্বর ভুমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের মহা-পরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। আব্দুল বারিক শেখ উপজেলার কলাবাড়িয়া গ্রামের মৃত আব্দুর রহমান শেখের ছেলে।

অভিযোগের বিবরণে জানা যায়, উপজেলার কলাবাড়িয়া মৌজার এসএ ৪৬৫০ ও হাল ৭৬৬৪ দাগের ২৬ শতক জমি তার পৈত্রিক ভিটা। সে হিসাবে চলতি সেটেলমেন্ট জরিপে বুজারত ৩৭৮২ ও ডিপি ৩৬১ নম্বর খতিয়ানে তার নামে ২৬ শতক জমি রেকর্ড ভুক্ত হয়। কিন্তু তিনি ওই খতিয়ানের মুদ্রনকৃত পরচা পাওয়ার পর জানতে পারেন তার খতিয়ান থেকে ওই দাগের জমি তঞ্চকী ও জালিয়াতির মাধ্যমে কর্তন করে কোমেলা খাতুনের নামে ডিপি ৩৬৬৬ নম্বর খতিয়ানে ও নিজাম উদ্দিন খানের নামে ডিপি ৩৫৪৬ নম্বর খতিয়ানে জালিয়াতিপূর্ণ ভাবে রেকর্ড ভুক্ত করা হয়েছে। পরবর্তীতে তিনি খোজ নিয়ে জানতে পারেন যে, তার অজ্ঞাতসারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সাথে যোগসাজসে ১৭৯ নম্বর একটি ভুয়া ও জালিয়াতিপূর্ণ আপত্তি কেস সৃজন করে তার ওই জমি হাতিয়ে নেয়া হয়েছে।

জালিয়াতির মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া জমির রেকর্ড সংশোধসহ নিজ খতিয়ানে ফেরত পেতে তিনি বিধি মোতাবেক যশোরের জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসারের নিকট লিখিত আবেদন দাখিল করেন। জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার তার আবেদন শুনানি ও প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কালিয়ার ভারপ্রাপ্ত সহকারি সেটেলমেন্ট অফিসার মোহাম্মাদ ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ খানকে দায়িত্ব অর্পণ করেন। সে অনুযায়ী ফরিদ উদ্দিন খান গত ২২ অক্টোবর শুনানীর প্রথম দিন ধার্য করে বারিককে নোটিশ দেন। কিন্তু ধায্য তারিখে তিনি শুনানী গ্রহন না করে গত ২০ নভেম্বর শুনানীর পরবর্তী দিন ধায্য করেন। কিন্তু শুনানী গ্রহন না করে ধায্য তারিখের আগে বিবাদি কোমেলা খাতুন ও নিজাম উদ্দিনের নিকট থেকে অনৈতিক ভাবে লাভবান হয়ে তার আবেদন গুলো যশোর জোনাল অফিসে পাঠিয়ে দিয়েছেন। যশোরে বা নড়াইলে আবেদন গুলোর শুনানী হবে বলে তিনি এই মুক্তিযোদ্ধাকে জানিয়েছেন।

আব্দুল বারিক শেখ অভিযোগ করে বলেন, আমার জমি জালিয়াতির মাধ্যমে সেটেলমেন্ট অফিসের অসাধু কর্মকর্তারা গোপনে ওই দুইজনের নামে রেকর্ড করিয়ে দিয়েছেন। আবার আমার জমি উদ্ধারের আবেদন ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে যশোরে পাঠানো হয়েছে। ৮১ বছর বয়সে ৭০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে যশোরে গিয়ে শুনানীতে অংশ নিতে না পারি, দলিলপত্র দাখিল করতে না পারি সেই পরিকল্পনায় বিবাদীর সঙ্গে যোগসাজসে কালিয়ার সেটেলমেন্ট অফিসার হয়রানি করছেন বলে তার অভিযোগ।
খোজনিয়ে জানা গেছে, নিজাম উদ্দিন খান ইতোপূর্বে মারা গেছেন। তবে কোমেলা খাতুনের ছেলে মো. ইকবাল হোসেন ওরফে বাচ্চু শেখ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তার মা ও মামা নিজাম উদ্দিন খানের নামে যে জমি রেকর্ড হয়েছে তার কাগজপত্র রয়েছে। কালিয়ার ভারপ্রাপ্ত সহকারি সেটেলমেন্ট অফিসার মোহাম্মাদ ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ খান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বারিকের আবেদন গুলো যশোর জোনাল অফিসে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com